বিভক্তি ও অনুসর্গের মধ্যে পার্থক্য

বাংলা ব্যাকরণে বিভক্তি ও অনুসর্গের ব্যবহার অনেক। আমরা অনেকেই বিভক্তি ও অনুসর্গকে একই মনে করি কিন্তু উভয়ের পার্থক্য রয়েছে। বিভক্তি সাধারণত বাক্যের বিভিন্ন শব্দের সঙ্গে অন্বয় সাধনের জন্য নামপদ বা ক্রিয়াপদের সাথে যুক্ত হয়। অপরদিকে, অনুসর্গ শব্দ বিভক্তির ন্যায় বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে। 

বিভক্তি ও অনুসর্গের মধ্যে পার্থক্য, azhar bd academy

বিভক্তি কি?

বাক্যস্থিত একটি শব্দের সাথে অন্য শব্দের অন্বয় সাধনের জন্য শব্দের সাথে যে সকল বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়, তাকে বিভক্তি বলে। যেমন, শিশুকে খাবার দাও, এখানে ‘শিশু’ শব্দের শেষে ‘কে’ বিভক্তি যুক্ত হয়েছে। বিভক্তি দুই প্রকার যথা- (১) নাম বা শব্দ বিভক্তি ও (২) ক্রিয়া বিভক্তি।

অনুসর্গ কি?

যে অব্যয় শব্দগুলো কখনো স্বাধীন পদরূপে, আবার কখনো শব্দ বিভক্তির ন্যায় বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে, সেগুলোকে অনুসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয় বলা হয়। অনুসর্গগুলো কখনো প্রাতিপাদিকের পরে ব্যবহৃত হয়, আবার কখনো ‘কে’ বা ‘র’ বিভক্তিযুক্ত শব্দের পরে বসে। যেমন, দু:খ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে?। শত্রুর সহিত সন্ধি চাই না। এখানে ‘বিনা’ ও ‘সহিত’ বাক্যে স্বাধীন পদ হিসেবে বসে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহার্য করেছে।

বিভক্তি ও অনুসর্গের পার্থক্য

১. বিভক্তির স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার নেই। বিপরীতে, অনুসর্গের স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার আছে।

২. বিভক্তি পদের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় থাকে। অন্যদিকে, অনুসর্গ পদের পরে স্বাধীনভাবে বসে।

৩. বিভক্তি কোনো পদ নয়। অপরদিকে, অনুসর্গ  এক ধরনের অব্যয় পদ।

৪. বিভক্তি কারক ও ক্রিয়ার কাল চিহ্নিত করে। বিপরীতে, অনুসর্গ ক্রিয়ার কাল চিহ্নিত করে না।

৫. বিভক্তির উদাহরণের মধ্যে রয়েছে ‘কে’, ‘রে’, ‘র’, ‘এর’, ‘য়’, ‘তে’, ‘দ্বারা’, ‘থেকে’, ‘চেয়ে’ ইত্যাদি। অন্যদিকে, অনুসর্গের উদাহরণের মধ্যে রয়েছে ‘প্রতি’, ‘বিনা’, ‘সহিত’, ‘ব্যতীত’, ‘তরে’, ‘জন্যে’, ‘মধ্যে’ ইত্যাদি। 

Do not enter any harmful link

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Do not enter any harmful link

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন