ক্রোমোজোম কি? প্রকার ও কার্যাবলী

ক্রোমোজোম কি?

ক্রোমোজোম হল বংশগতির প্রধান উপাদান। কোষের নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে অবস্থিত নিউক্লিওপ্রোটিন দ্বারা গঠিত যেসব তন্তুর মাধ্যমে জীবের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য বংশ পরস্পরায় সঞ্চারিত হয়, তাকে ক্রোমোজোম (Chromosome) বলে। প্রতিটি কোষে সাধারণত 23 জোড়া (46টি) ক্রোমোজোম থাকে। এর মাধ্যমেই জীবের সকল বৈশিষ্ট্য বংশ পরস্পরায় সঞ্চারিত হয়। ক্রোমোজোম ডিএনএ (DNA) বা জীন অণু ধারণ করে এবং এর মাধ্যমে প্রোটিন সংশ্লেষ করে।

গঠন
ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠনের মধ্যে রয়েছে নিউক্লিক এসিড (DNA, RNA), প্রোটিন (Histone, non-histon), ধাতব আয়ন (Ca, Mg, Fe ইত্যাদি) ও বিভিন্ন এনজাইম। প্রাথমিকভাবে ক্রোমোজোমে 90% DNA এবং ক্ষারীয় প্রোটিন (হিস্টোন) এবং 10%RNA ও আম্লিক প্রোটিন থাকে। 

ক্রোমোজোম কি? প্রকার ও কার্যাবলী, azhar bd academy

ক্রোমোজোমের আকারে সাধারণত দণ্ডাকার হয়। সাধারণ ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্যে ০.২৫-৫০ μm এবং ব্যাস ০.০২-২μm হতে পারে। মানুষের ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্য ৬μm।

ইতিহাস
১৮৮৮ সালে বিজ্ঞানী ওয়েলডেয়ার (Waldeyer) কোষ বিভাজনের প্রোফেজ দশায় প্রাপ্ত দণ্ডাকার গঠনের ক্রোমাটিন তন্তুর নাম দেন ক্রোমোজোম। ১৯৩৩ সালে বিজ্ঞানী বোভেরি (Bovery) প্রমাণ করেন যে ক্রোমোজোমই বংশগতির ধারক ও বাহক। ১৯৩৫ সালে বিজ্ঞানী হেইজ (Heitz) সর্বপ্রথম ক্রোমোজোমের গঠনের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

ক্রোমোজোমের প্রকারভেদ

কাজের উপর ভিত্তি করে ক্রোমোজোম দুই প্রকার যেমন, অটোজম এবং সেক্স ক্রোমোজোম। 

১. অটোজম (Autosomes): জীবের দৈহিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী ক্রোমোজোমকে অটোজম বলে।মানুষের দেহকোষে অটোজমের সংখ্যা ৪৪টি (২২ জোড়া)। এর সেটকে A দ্বারা প্রকাশ করা হয়। দেহকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যাকে ডিপ্লয়েড বলে।

২. সেক্স ক্রোমোজোম (Sex chromosomes): জীবের যৌন বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী ক্রোমোজোমকে সেক্স ক্রোমোজোম বলে। মানুষের জনন কোষে (শুক্রাণু বা ডিম্বাণু) ১ জোড়া (X,Y) লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোম থাকে। পুরুষের দেহে সেক্স ক্রোমোজোম থাকে XY এবং স্ত্রীর দেহে থাকে XX সেক্স ক্রোমোজোম। 

ক্রোমোজোমের কাজ

  • মানুষের দৈহিক বৈশিষ্ট্য যেমন, চোখের রং, চুলের প্রকৃতি, দেহের গঠন ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।
  • পিতামাতা থেকে বংশধরদের কাছে জেনেটিক তথ্য স্থানান্তর করে।
  • DNA) বা জীন অণু ধারণ করে।
  • জীবের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য বংশ পরস্পরায় সঞ্চারিত করে।
  • DNA এর মাধ্যমে প্রোটিন সংশ্লেষ করে জীবের যাবতীয় জৈব রাসায়নিক ও দৈহিক কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • বিবর্তনের মূল উপাদান হিসেবে কাজ করে।
  • কোষ বিভাজনে সহায়তা করে।
  • নিউক্লিয় উপাদান তৈরিতে ভূমিকা আছে।

Do not enter any harmful link

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Do not enter any harmful link

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন