সুষম খাদ্য কি? সুষম খাদ্যের উপাদান

সুষম খাদ্য শরীরকে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রদান করে। এটি আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় ক্ষয় পূরণের জন্য সঠিত অনুপাতে খনিজ, ভিটামিন, অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং ক্যালোরির যোগান দেয়।

সুষম খাদ্য কি?

সুষম খাদ্য হল এমন একটি খাদ্য তালিকা যাতে প্রোটিন, খনিজ, ভিটামিন, ক্যালোরি এবং পুষ্টিকর বিভিন্ন ধরণের খাবার নির্দিষ্ট অনুপাতে থাকে।

সহজভাবে বলতে গেল, যেসব খাদ্যে মানবদেহের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান থাকে, তাকে সুষম খাদ্য বলে। সুষম খাদ্যের মধ্যে রয়েছে শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন ও খনিজ এবং পানি সমৃদ্ধ খাবার। এগুলো খাবারের তালিকায় সঠিক অনুপাতে উপস্থিত থাকলে তাকে আমরা সুষম খাদ্য বলি। নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

এছাড়া এটি মানুষের সুস্বাস্থ্য বজায় এবং রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সুষম খাদ্য মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং ক্যালোরি পেতে সাহার্য করে।


সুষম খাদ্যের উপাদান

সুষম খাদ্যের উপাদান সমূহ নিম্নরূপ বর্ণনা করা হল:

সুষম খাদ্য কি? সুষম খাদ্যের উপাদান, azhar bd academy

১. আমিষ (Proteins)
মানব দেহের বৃদ্ধির জন্য এবং শরীরের ক্ষয়-ক্ষতি মেরামতের জন্য প্রোটিন বা আমিষের প্রয়োজন। প্রোটিন আমাদের পেশী, অঙ্গ, ত্বক এবং চুল গঠনে অবদান রাখে। এটি দুগ্ধজাত দ্রব্য, মাংস, ডিম, মুরগি ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। এছাড়া মাছ, মাংস, কলিজা, ডিম, ডাল, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে আমিষ রয়েছে।

২. শর্করা (Carbohydrates)
কাজ করার জন্য আমাদের শক্তি প্রয়োজন এবং এটি কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাদ্য দ্বারা পরিপূর্ণ হয়। শর্করা চাল, গম, চাপাতি, রুটি ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। এটি আমাদের প্রধান খাদ্য। দৈনন্দিন ক্যালোরির প্রায় ৫৫-৬০% কার্বোহাইড্রেট থেকে গ্রহণ করা উচিত।

৩. চর্বি (Fats)
আমাদের শক্তির চাহিদার কিছু অংশ চর্বি দ্বারা পূরণ হয়। মাখন, ঘি, তেল, পনির ইত্যাদিতে চর্বি পাওয়া যায়। এগুলো স্নেহ বা চর্বিযুক্ত খাবারের প্রধান উৎস। অলিভ, ক্যানোলা, সানফ্লাওয়ার বা বাদামের তেলও চর্বির অন্যতম প্রধান উৎস। ১ গ্রাম চর্বি ৯ ক্যালোরি সরবরাহ করে।


৪. খনিজ ও ভিটামিন (Minerals and Vitamins)
খনিজ ও ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি প্রধানত শাকসবজি এবং ফল থেকে প্রাপ্ত আহরণ করি। শরীরে খনিজ ও ভিটামিনের অভাবের কারণে রক্তশূন্যতা, গলগন্ড ইত্যাদির রোগ হতে পারে। সাধারণত শাকসবজি ও ফলমূল ভিটামিন ও খনিজ লবণের প্রধান উৎস।

৫. পানি (Water)
আমাদের শরীর প্রায় ৭০% পানি দ্বারা গঠিত। এটি খাদ্যের শোষণ, হজম, এবং মলত্যাগে সহায়তা করে। আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং তাপ বিতরণের জন্যও পানি অপরিহার্য।

৬. ফাইবার (fibre)
ফাইবার আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে। এটিতে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট রয়েছে, যা আমাদের ত্বকে পুষ্টি জোগায় এবং মলত্যাগ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলমূল, শাক-সবজি এবং শস্য ফাইবারের সমৃদ্ধ উৎস।

সুষম খাদ্যের উপকারিতা

সুষম খাদ্যের স্বাস্থ্য উপকারিতা নিম্নরূপ বর্ণনা করা হল:
    • নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
    • সুষম খাদ্য শক্তি বাড়ায়, শরীরের কার্যকারিতা উন্নত করে, ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং ওজন বৃদ্ধি রোধ করে।
    • সুষম খাদ্য পুষ্টির ঘাটতি এড়াতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
    • এটি নির্দিষ্ট রোগ যেমন ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে পারে। এটি ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় সহায়ক।
    • এটি মানুষের সুস্বাস্থ্য বজায় এবং রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 
    • সুষম খাদ্য মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং ক্যালোরি পেতে সাহার্য করে।

    Do not enter any harmful link

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Do not enter any harmful link

    Post a Comment (0)

    নবীনতর পূর্বতন