বুলিয়ান অ্যালজেবরা− বৈশিষ্ট্য, সূত্র

বুলিয়ান অ্যালজেবরা কি?

দুটি বাইনারি সংখ্যার (০, এবং ১) ওপর ভিত্তি করে অন্য সকল প্রকার সংখ্যার প্রদর্শন ও হিসাবনিকাশের বীজগণিতীয় পদ্ধতিকে বুলিয়ান অ্যালজেবরা বলে। এটিকে বাইনারি অ্যালজেবরা বা লজিক্যাল অ্যালজেবরাও বলা হয়ে থাকে।

বুলিয়ান অ্যালজেবরা লজিক গেট বা ডিজিটাল সার্কিটের ডিজাইনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এর প্রতিটি চলকের মান কেবল ০ কিংবা ১ হতে পারে। কোন চলকের মান সত্য হলে ১ এবং মিথ্যা হলে ০ ধরা হয়। বুলিয়ান অ্যালজেবরা মূলত লজিকের সত্য অথবা মিথ্যা- এ দুটি স্তরের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। 

বুলিয়ান অ্যালজেবরা− বৈশিষ্ট্য, সূত্র, azhar bd academy

১৮৫৪ সালে জর্জবুল গণিত ও যুক্তির মধ্যে যে সুসম্পর্ক রয়েছে তা সনাক্ত করতে সক্ষম হন। তার এই বীজগণিতই বুলিয়ান অ্যালজেবরা নামে পরিচিত। গাণিতিক যুক্তি, ডিজিটাল যুক্তি, প্রোগ্রামিং, সেট তত্ত্ব এবং পরিসংখ্যানে বুলিয়ান অ্যালজেবরার ব্যবহার রয়েছে। এটি ডিজিটাল সার্কিট বা ডিজিটাল গেট বিশ্লেষণ এবং সরলীকরণ করতেও ব্যবহৃত হয়।


বুলিয়ান অ্যালজেবরা তিন ধরনের মৌলিক যুক্তিমূলক ক্রিয়া সম্পাদন করে। যেমন, 
  1. অর অপারেশন (OR Operation) বা যৌক্তিক যোগ।
  2. অ্যান্ড অপারেশন (AND Operation) বা যৌক্তিক গুণ।
  3. নট অপারেশন (NOT Operation)।
বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যৌক্তিক যোগের চারটি সূত্র প্রচলিত। যেমন−
0 + 0 = 0
0 + 1 = 1
1 + 0 = 1
1 + 1 = 1

বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যৌক্তিক যোগের ক্ষেত্রে যেকোনো একটির মান ১ হলে যোগফল ১ হবে, অন্যথায় ০ হবে।

বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যৌক্তিক গুণের সময় বুলিয়ান চলকগুলোর মানের মধ্যে গুণ চিহ্ন (.) ব্যবহার করা হয়। যৌক্তিক গুণের চারটি নিয়ম প্রচলিত। যেমন-
0 . 0  = 0
0 . 1   = 0
1 . 0   = 0
1 . 1   = 1

যৌক্তিক গুণের ক্ষেত্রে যেকোনো একটির মান ০ হলে গুণফল ০ হবে, অন্যথায় ১ হবে।

বুলিয়ান অ্যালজেবরার বৈশিষ্ট্য

  • বুলিয়ান অ্যালজেবরায় দুটি সংখ্যা ‘০’ এবং ‘১’ ব্যবহৃত হয়।
  • এটি দশমিক অ্যালজেবরার তুলনায় সহজ পদ্ধতি।
  • এটিতে কোনো ধরনের ভগ্নাংশ, লগারিদম, বর্গ, ঋণাত্মক সংখ্যা, কাল্পনিক সংখ্যা ইত্যাদি ব্যবহার করা যায় না।
  • কোনো ধরনের জ্যামিতিক বা ত্রিকোণমিতিক সূত্র ব্যবহার করা যায় না।
  • শুধু যৌক্তিক যোগ, গুণ ও পূরকের মাধ্যমে সমস্ত গাণিতিক কাজ করা হয়।
  • বুলিয়ান অ্যালজেবরা সাধারণ অ্যালজেবরার মত নয়।
  • আধুনিক কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষায় বুলিয়ান অ্যালজেবরা ব্যবহৃত হয়।
  • ফিনান্সে, দ্বিপদী বিকল্পের মূল্য নির্ধারণের মডেলগুলোতে ব্যবহৃত হয়।
  • ডিজিটাল সার্কিট বা ডিজিটাল গেট বিশ্লেষণ এবং সরলীকরণ করতে ব্যবহৃত হয়।

বুলিয়ান চলক: বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যেটির মান সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়, তাকে বুলিয়ান চলক বলে। যেমন- C = A + B, এখানে A ও B হচ্ছে বুলিয়ান চলক।

বুলিয়ান ধ্রুবক: বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যেটির মান সময়ের সাথে অপরিবর্তিত থাকে তাকে বুলিয়ান  ধ্রুবক বলে। যেমন- A = 0 + 1,  এখানে 0 এবং 1 হচ্ছে বুলিয়ান ধ্রুবক।

বুলিয়ান পূরক: বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যেকোনো চলকের মান ০ অথবা ১ হয়। এই ০ ও ১ কে একটি অপরটির বুলিয়ান পূরক বলা হয়। বুলিয়ান পূরকে ‘–’ বা ‘  ‘  ’ চিহ্নের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। গণিতের ভাষায় লেখা হয় A এর পূরক A′।

বুলিয়ান উপপাদ্য: যেসব উপাপাদ্য ব্যবহার করে জর্জবুল সকল প্রকার যৌক্তিক বিষয়ের গাণিতিক রূপ প্রদান করেন, সেই উপাপাদ্য সমূহকে বুলিয়ান উপপাদ্য বলা হয়।

Do not enter any harmful link

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Do not enter any harmful link

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন